আন্তর্জাতিক আইনের প্রতি শ্রদ্ধা দেখানোর আহ্বান
আন্তর্জাতিক আইনে ন্যায়বিচারের কঠোর মানদণ্ডের গ্যারান্টি দেওয়া হয়েছে- ভলকার তুর্ক
বাংলাদেশে মানবাধিকার লঙ্ঘন ও নিপীড়ন যেন আর না ঘটে, সে বিষয়ে অন্তর্বর্তী সরকারের প্রতি জোরালো আহ্বান জানিয়েছেন জাতিসংঘের মানবাধিকার বিষয়ক হাইকমিশনার ভলকার তুর্ক। পাশাপাশি আগের সরকারের আমলে জোরপূর্বক গুম ও নির্যাতনের জন্য অভিযুক্তদের বিচার প্রক্রিয়ার সূচনাকে তিনি জবাবদিহিতার দিকে একটি গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ হিসেবেও উল্লেখ করেছেন। বুধবার এক বিবৃতিতে এ আহ্বান জানানো হয়েছে।
সেখানে জাতিসংঘের মানবাধিকার বিষয়ক হাইকমিশনার বলেন, বাংলাদেশে জোরপূর্বক গুমের জন্য এই প্রথম আনুষ্ঠানিক অভিযোগ আনা হয়েছে। এটা ভুক্তভোগী ও তাদের পরিবারের জন্য গুরুত্বপূর্ণ মুহূর্ত।
গত সপ্তাহে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে জোরপূর্বক গুম ও নির্যাতনের অভিযোগে দুটি মামলার আনুষ্ঠানিক অভিযোগ জমা দেওয়া হয়। ট্রাইব্যুনাল সাবেক ও বর্তমান সেনাকর্মকর্তাদের বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করেছে। অভিযুক্তদের মধ্যে ডিজিএফআই-এর কয়েকজন মহাপরিচালক এবং র্যাবের সাবেক কয়েকজন কর্মকর্তাও রয়েছেন।
শনিবার বাংলাদেশ সেনাবাহিনী এক ডজনেরও বেশি কর্মকর্তাকে 'হেফাজতে' নেওয়ার ঘোষণা দিয়েছে, যারা আগের সরকারের সময়ে মারাত্মক অপরাধের দায়ে অভিযুক্ত।
ভলকার তুর্ক বলেন, আটক এই কর্মকর্তাদের দ্রুত বেসামরিক আদালতে উপস্থাপন করা গুরুত্বপূর্ণ। পাশাপাশি সুষ্ঠু ও স্বচ্ছতার সাথে ফৌজদারি মামলা পরিচালনার জন্য সেনাবাহিনীর পদক্ষেপকে স্বাগত জানান তিনি।
হাইকমিশনার বলেন, আন্তর্জাতিক আইনে ন্যায়বিচারের কঠোর মানদণ্ডের গ্যারান্টি দেওয়া হয়েছে, তার প্রতি পূর্ণ শ্রদ্ধা দেখানোর আহ্বান জানাচ্ছি। এসব স্পর্শকাতর ও গুরুত্বপূর্ণ মামলার ভুক্তভোগী ও সাক্ষীর সুরক্ষা নিশ্চিত করতে হবে।
গত বছর ছাত্রদের নেতৃত্বে বিক্ষোভর সময় যারা মারাত্মক মানবাধিকার লঙ্ঘনের সাথে জড়িত তাদের আন্তর্জাতিক মানদণ্ড অনুসরণ করেই জবাবদিহিতার আওতায় আনার সুপারিশ করা হয়েছিলো জাতিসংঘের তথ্যানুসন্ধান রিপোর্টে। হাইকমিশনার বিপুল সংখ্যক মামলার নিষ্পত্তিতে অগ্রাধিকার দেওয়ার জন্য বাংলাদেশ কর্তৃপক্ষের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন। এর মধ্যে কিছু মামলা আগের প্রশাসনের সময় দায়ের করা।
ভলকার তুর্ক বলেন, প্রতিটি মামলায় যথাযথ প্রক্রিয়া অনুসরণ ও ন্যায্য নিষ্পত্তি এবং নির্বিচারে আটক থাকা ব্যক্তির মুক্তি গুরুত্বপূর্ণ। এর মধ্যে জোরপূর্বক গুম থেকে বেঁচে আসা এবং ভিত্তিহীন অভিযোগের শিকার ব্যক্তিরাও আছেন, যার মধ্যে বিগত সরকারের সমর্থক ও সাংবাদিকরাও রয়েছেন। তাদের অনেকের ফৌজদারি অপরাধের অভিযোগ মোকাবিলা করছেন এবং এর মধ্যে কঠোর সন্ত্রাসবিরোধী আইনও আছে। হাইকমিশনার অন্তর্বর্তী সরকারকে অনুরোধ করেছেন, অভিযোগের গুরুত্ব যাই হোক না কেন তারা যেন আদালতে চলমান কোনো মামলায় মৃত্যুদণ্ডের রায় না দেয়।
কমেন্ট বক্স