‘তাই তাকে আইনানুযায়ী চরম দণ্ড (মৃত্যুদণ্ড) দেওয়া শ্রেয়’
শেখ হাসিনা ছিলেন সব অপরাধীর ‘প্রাণভোমরা’ - চিফ প্রসিকিউটর
আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের মামলায় শেখ হাসিনা যেহেতু সব অপরাধীর ‘প্রাণভোমরা’ ছিলেন, তাই তাকে আইনানুযায়ী চরম দণ্ড (মৃত্যুদণ্ড) দেওয়া শ্রেয় বলে মনে করেন চিফ প্রসিকিউটর মোহাম্মদ তাজুল ইসলাম।
এ সংক্রান্ত মামলায় রাষ্ট্রপক্ষের যুক্তিতর্ক উপস্থাপন শেষে বৃহস্পতিবার (১৬ অক্টোবর) ট্রাইব্যুনাল প্রাঙ্গণে সাংবাদিকদের তিনি এ কথা বলেন।
তাজুল ইসলাম বলেন, বাংলাদেশ থেকে অপরাধ সংঘটনের পর পালিয়ে গেলেও ভারত থেকে ক্রমাগত আন্দোলনকারীদের হত্যার হুমকি দিয়েছেন শেখ হাসিনা। যারা বিচার চেয়ে মামলা করেছেন, তাদেরও নির্মূলের কথা বলেছেন। তাদের বাড়িঘর জ্বালিয়ে দেওয়ার কথা বলেছেন। এতে বোঝা যাচ্ছে যে, এত হত্যাকাণ্ড ঘটিয়ে মানবতাবিরোধী অপরাধের পরও তার মধ্যে ন্যূনতম অনুশোচনা নেই। তিনি একজন হার্ডনট ক্রিমিনালের ভূমিকায় অবতীর্ণ হয়েছেন। সুতরাং, এই ট্রাইব্যুনালের মামলায় তিনি যেহেতু সব অপরাধীর প্রাণভোমরা ছিলেন, তাই তাকে আইনানুযায়ী চরম দণ্ড দেওয়া শ্রেয়। তাকে যদি চরম দণ্ড না দেওয়া হয়, এটা অবিচার করা হবে।
মামলার আরেক আসামি আসাদুজ্জামান খান কামাল প্রসঙ্গে চিফ প্রসিকিউটর আরও বলেন, গ্যাং অব ফোরের সদস্য ছিলেন সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল। তার বাসায় বসে এই হত্যাকাণ্ডের পরিকল্পনা করা হয়েছে। ড্রোন ওড়ানোসহ হেলিকপ্টার থেকে মারণাস্ত্র ছোড়ার সিদ্ধান্ত হয়েছে। তিনি নিজে গ্রাউন্ডে গিয়ে গিয়ে দেখেছেন— সঠিকভাবে হত্যা করা হচ্ছে কিনা। তাকে ভিডিও দেখানো হয়েছে।
তিনি আরও বলেন, আসাদুজ্জামান খান কামাল কমান্ড স্ট্রাকচারে দ্বিতীয় পজিশনে ছিলেন। এ কারণে তার ব্যাপারেও চরম দণ্ড (মৃত্যুদণ্ড) চেয়েছি ট্রাইব্যুনালে। তবে রাজসাক্ষী হয়ে সাবেক আইজিপি চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুন যেহেতু আইন অনুযায়ী আদালতকে তথ্য দিয়ে বা সত্য উদঘাটনের সাহায্য করেছেন, তার ব্যাপারে আদালত সিদ্ধান্ত নেবেন। এছাড়া যারা শহীদ ও আহত হয়েছেন, তারা হয়তো পরিবারের আলোর প্রদীপ ছিলেন। ভবিষ্যতে পরিবারের দায়িত্ব নিতেন তারা। সুতরাং, এসব পরিবারের ক্ষতিপূরণের জন্য আসামিদের সম্পদ থেকে ক্ষতিপূরণ দেওয়া উচিত বলে আদালতের কাছে আমরা আদেশ চেয়েছি।
প্রসঙ্গত, এ মামলায় তিনজনের বিরুদ্ধে মানবতাবিরোধী অপরাধের পাঁচটি অভিযোগ আনে প্রসিকিউশন। আনুষ্ঠানিক অভিযোগ মোট আট হাজার ৭৪৭ পৃষ্ঠার। এর মধ্যে তথ্যসূত্র দুই হাজার ১৮ পৃষ্ঠার, জব্দতালিকা ও দালিলিক প্রমাণাদি চার হাজার পাঁচ পৃষ্ঠার এবং শহীদদের তালিকার বিবরণ দুই হাজার ৭২৪ পৃষ্ঠার রয়েছে। টানা পাঁচদিন এ মামলায় যুক্তিতর্ক উপস্থাপন করে প্রসিকিউশন পক্ষ।
কমেন্ট বক্স