
গাজায় যুদ্ধবিরতি কার্যকর রাখার জন্য ইসরায়েলে সর্বোচ্চ ২০০ মার্কিন সেনা পাঠানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছে যুক্তরাষ্ট্র। মধ্যপ্রাচ্যে আগে থেকেই অবস্থানরত এই সেনারা একটি বহুজাতিক টাস্কফোর্সের অংশ হিসেবে কাজ করবে বলে জানিয়েছেন মার্কিন কর্মকর্তারা। ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম বিবিসি এ খবর জানিয়েছে।
মার্কিন কর্মকর্তারা জানান, ইসরায়েলে গঠন করা হবে একটি সিভিল-মিলিটারি কোঅর্ডিনেশন সেন্টার বা বেসামরিক-সামরিক সমন্বয় কেন্দ্র। এতে মিসর, কাতার, তুরস্ক ও সংযুক্ত আরব আমিরাতের সেনারা যোগ দিতে পারেন।
এক জ্যেষ্ঠ মার্কিন কর্মকর্তা বলেন, কোনও মার্কিন সেনা গাজায় প্রবেশ করবে না। যুক্তরাষ্ট্রের ভূমিকা হবে একটি যৌথ নিয়ন্ত্রণ কেন্দ্র তৈরি করা, যা বহুজাতিক বাহিনীর কার্যক্রমকে একীভূত করবে।
ইসরায়েলি সরকার ইতোমধ্যে হামাসের সঙ্গে গাজা যুদ্ধবিরতির প্রথম ধাপ অনুমোদন করেছে, যার ফলে বন্দি বিনিময় ও অস্ত্রবিরতি শুরু হয়েছে।
এই টাস্কফোর্সের নেতৃত্বে থাকবে যুক্তরাষ্ট্রের সেন্ট্রাল কমান্ড (সেন্টকম)। তারা যুদ্ধবিরতির অগ্রগতি তদারকি করবে এবং মানবিক সহায়তা কার্যক্রম সমন্বয় করবে। এক কর্মকর্তা জানান, মাঠপর্যায়ের পরিস্থিতি ও যুদ্ধবিরতির সম্ভাব্য লঙ্ঘন সম্পর্কে ইসরায়েল ও হামাসকে যথাক্রমে মিসর ও কাতারের মাধ্যমে অবহিত করা হবে।
সেন্টকমের প্রধান অ্যাডমিরাল ব্র্যাড কুপার এই টাস্কফোর্সের নেতৃত্ব দেবেন। তিনি এই সপ্তাহে মিসরে অনুষ্ঠিত পরোক্ষ শান্তি আলোচনায় অংশ নেন বলে জানিয়েছেন মার্কিন কর্মকর্তারা।
সেই আলোচনার ফলেই বৃহস্পতিবার যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প ঘোষণা দেন যে, ইসরায়েল ও হামাস তার উন্মোচিত গাজা শান্তি পরিকল্পনার প্রথম ধাপে সম্মতি দিয়েছে।
ট্রাম্পের ২০ দফা গাজা পরিকল্পনার একটি মূল উপাদান হলো যুক্তরাষ্ট্র ও আরব-মিত্রদের সঙ্গে মিলে একটি সাময়িক আন্তর্জাতিক স্থিতিশীলতা বাহিনী গঠন, যা গাজায় মোতায়েন হবে। তবে এই প্রস্তাব বাস্তবায়িত হবে বন্দি ও বন্দিমুক্তি প্রক্রিয়া সম্পন্ন হওয়ার পর।
২০২৩ সালের ৭ অক্টোবর হামাসের ইসরায়েল আক্রমণে প্রায় ১ হাজার ২০০ জন নিহত এবং ২৫১ জনকে জিম্মা করা হয়। এর জবাবে ইসরায়েলের ব্যাপক সামরিক অভিযানে গাজায় এ পর্যন্ত ৬৭ হাজারের বেশি ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছেন, যাদের মধ্যে ২০ হাজারেরও বেশি শিশু। গাজার হামাস-নিয়ন্ত্রিত স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের এসব পরিসংখ্যান জাতিসংঘসহ আন্তর্জাতিক সংস্থাগুলো নির্ভরযোগ্য বলে বিবেচনা করে।